মনিরুজ্জামান সুমনঃ জেলা পরিষদের নির্বাচনে কে সামনে রেখে চেয়ারম্যান,সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে আগামী ১৭ অক্টোবর দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি জেলা পরিষদে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য এবং ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হবে। সারাদেশের ন্যায় ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৭অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ও এবং প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর। এবারের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং সহকারী হিসেবে থাকেবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কর্মকর্তারা প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর। জেলা পরিষদের দ্বিতীয় ভোটে জেলার ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোট দেবেন।ভোট গ্রহণের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে ভোটার ছাড়াও প্রার্থীদের নিয়ে চুলছেড়া আলোচনা সমালোচনায় পিছিয়ে নেই এ জেলার সাধারণ মানুষ। জেলা জুড়ে শহরে,পাড়ায়-
মহল্লায়, হাটে মাঠে ও চায়ের দোকান গুলোতে এখন একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান। আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহ জেলায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হতে চুড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সম্ভাব্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। তবে, বিএনপি বা অন্যকোনো দলের প্রার্থীদের আগ্রহ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীদের মধ্যে নাম ঠিকানা সামনে এসেছে। যাদের কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ পছন্দের নেতাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান বলে দাবি উত্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা ও আলোচনা-সমালোচনা শুরু করেছেন। ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন-বর্তমান জেলা পরিষদের রানিং চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা, ক্লিন ইমেজের অধিকারী নন্দিতনেতা কনক কান্তি দাস,তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ধারণা সেই দিক বিবেচনা করে কনক কান্তি দাসই ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের নৌকার মাঝি হবেন। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাডঃ আজিজুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন, শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, শৈলকূপা থানা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ঝিনাইদাহ সরকারী কে.সি কলেজ এর অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বীব মুক্তিযুদ্ধা অধ্যাপক আবেদ আলী,জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি,ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি,সাবেক ছাত্রনেতা তৈয়ব আলী জোর্য়াদ্দার, এই জেলায় আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন তিনি হলেন ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান দৈনিক বীর দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সৃজনী ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী,বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইচ চেয়ারম্যান ডঃ এম, হারুন অর রশীদ,জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি,ষাট দশকের সাবেক ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল হোসেন,জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা অশোক ধর এবং জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও ঝিনাইদহ জজ কোটের পিপি অ্যাড.ইসমাইল হোসেনও রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। জেলায় ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ঝিনাইদহ সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদুল ইসলাম ফোটনের নাম শোনা যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই এমপি ও সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ঝিনাইদহ জেলা থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীর নাম পাঠানোর নির্দেশ রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তিনিই প্রার্থী হবেন। আগামী ১০অক্টোবর এর মধ্যে ঢাকায় তালিকা পাঠাতে হবে। বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস অগ্রাধিকার পাবেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের জানা নেই। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাড.আজিজুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু এবারও জেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই হবে, সেহেতু মনোনয়ন পাওয়ার ওপরই নির্ভর করছে নির্বাচন করা না করা।২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর এর সেবারের জেলা পরিষদ নির্বাচন আমাকেই মনোনয়ন দেওয়া হলেও একটি বিশেষ কোঠার জন্য বাতিল হয়ে যায়।দল যদি তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন দেয় তাহলে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এবার আমি শতভাগ আশাবাদী। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলের নীতি আদর্শ মেনে দলের জন্য কাজ করছি। আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি একজন প্রার্থী। সেজন্য অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। এ জেলার সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি তৃনমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও চাইছেন যেন আমি নির্বাচন করি। জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক,জেলা আইনজীবি সমিতির বার বার নির্বাচিত সভাপতি ও ঝিনাইদহ জজ কোটের পিপি অ্যাড.ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি সবদিক বিবেচনা করে দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষনার সাথে সাথে নৌকা প্রতীক পেতে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও লবিং করতে জেলা,এমনকি কেন্দ্রেও দৌড় ঝাপ শুরু করেছে এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেতে প্রায় একডজন জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষনেতা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, সবাই নৌকায় উঠতে চান। কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি, বা কার হাতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনদের নৌকার বৈঠা। এমন প্রশ্ন জেলা থেকে তৃণমূলের মুখে মুখে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে দলের জন্য যারা সব সময় কাজ করেছেন, নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকায় মানুষের পাশে ছিলেন,গণভিত্তি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এমন প্রার্থী খুঁজে মনোনয়ন দেবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।